মুহাম্মদ কাইসার হামিদ, হাওড় অঞ্চল প্রতিনিধি :
প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস তার ভয়াল রূপ নিয়ে বাংলাদেশে এসে পৌঁছেছে । দেশজুড়ে এ ভাইরাস মহামারি আকার ধারণ করেছে। এরই মধ্যে কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচর উপজেলা নির্বাহী অফিসার কার্যালয়ের এক নাইট গার্ড সহ অফিস সংলগ্ন এলাকায় ৬ জনের শরীরে কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাস সংক্রমণ সনাক্ত হয়েছে। কুলিয়ারচরের কেন্দ্র বিন্দু উপজেলা নির্বাহী অফিসের নাইট গার্ড মোঃ মাহতাব উদ্দিনের নমুনায় কোভিড-১৯ পজেটিভ পাওয়ার পরও অফিস এলাকা লকডাউন না দিয়ে করোনা আতংক নিয়ে অফিস স্টাফ সহ উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবাইয়াৎ ফেরদৌসী দিন-রাত নিয়মিত অফিসের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। শুধু তাই নয় দেশ ও দেশের মানুষকে ভালোবেসে অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমে করোনা প্রতিরোধে উপজেলার প্রতিটি হাট-বাজার, রাস্তাঘাট, পাড়া -মহল্লা ও গ্রাম-গঞ্জে ঘুরে ঘুরে মানুষকে সচেতন করতে প্রচারণা কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি সামাজিক দূরুত্ব বজায় রাখতে, দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি রোধে ও বাজার নিয়ন্ত্রনে আইন শৃংখলা বাহিনীকে সাথে নিয়ে প্রতিদিন রাত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে বেড়াচ্ছেন। জীবাণুনাশক স্প্রেকরণের পাশাপাশি ত্রাণ বিতরণেও অংশগ্রহণ করছেন তিনি। উপজেলার সর্বস্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারী ও জনপ্রতিনিধিদের সাথে যোগাযোগ রেখে তাদের খোঁজ খবর নিচ্ছেন এবং তাদের সাথে সমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করে বেড়াচ্ছেন। এরই মাঝে করোনা ঝুকি নিয়ে দ্বায়িত্ব পালন করে দিন দিন কুলিয়ারচরবাসীর মন জয় করে নিচ্ছেন তিনি।
এব্যাপারে ইউএনও রুবাইয়াৎ ফেরদৌসী বলেন, প্রচারে নয়, কাজের মাধ্যমে করোনা প্রতিরোধে নিজেকে বিলিয়ে দিতে চাই।
গত ১৫ এপ্রিল ইউএনও অফিসের নাইট গার্ড মোঃ মাহতাব উদ্দিন (৫০) এর নমুনা সংগ্রহ করে পাঠান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। ওই নাইট গার্ড এর নমুনা পরীক্ষা শেষে কোভিড-১৯ পজিটিভ আসে।
বিশ্বস্ত সূত্রে জানা যায়, নমুনা নেওয়ার দিন (১৫এপ্রিল) ওই নাইট গার্ড ইউএনও অফিসের ওয়াইটিং রুমে, সাধারন শাখা ও নেজারত শাখার অফিস রুমে গিয়ে চেয়ারে বসে অফিস সহকারী মোঃ বিল্লাল হোসেন ও একাউন্টেন্ট ক্লার্ক মোঃ ইমরান হোসেনের সাথে কথা বলেন। এছাড়া ইউএনও’র বাসার গার্ড সেটে গিয়ে অফিস সহায়ক হিমেল, মালী মোঃ জুয়েল ও মালী মোঃ বাচ্চু মিয়ার সাথে কথা বলেন এবং উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে নমুনা দিয়ে আসেন।মাহতাব উদ্দিনের নমুনায় করোনা পজিটিভ পাওয়া যাওয়ার পর ইউএনও অফিসের অফিস সহকারী মোঃ বিল্লাল হোসেন, অফিস সহায়ক হিমেল, মালী মোঃ জুয়েল ও মালী মোঃ বাচ্চু মিয়া সহ নমুনা সংগ্রকারী চিকিৎসক ও নার্সদের শরীর থেকে নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকায় পাঠিয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার রুবাইয়াৎ ফেরদৌসী ও উপজেলা স্বাস্থ্য ও প. প. কর্মকর্তা ডাঃ মোহাম্মদ ওমর খসরু। এছাড়া তারা আরো বলেন, হাসপতাল ও উপজেলা নির্বাহী অফিস ভালোভাবে জীবানুনাশক দিয়ে ধৌত করা হয়েছে। হাসপাতাল ও ইউএনও অফিস এখনো লকডাউন করা হয়নি কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তারা বলেন, সরকারী কার্যক্রম পরিচালনার জন্য দেশবাসীর স্বার্থে হাসপাতাল ও ইউএনও অফিস লকডাউন করা হয়নি। তবে অফিস স্টাফদের পরীক্ষার ফলা ফলের ভিত্তিতে লকডাউনের বিষয়টি বিবেচনা করা হবে।
Leave a Reply