সিটি প্রতিবেদক: ‘করোনাভাইরাসের কারণে গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে মার্কেট বন্ধ আছে। দোকানপাট খুলছে না। সামনে ঈদ, এই সময়ে যদি মার্কেট না খোলা হয় তাহলেতো বেতনও পাবো না। পরিবারের সবাইকে নিয়ে এক প্রকার না খেয়েই থাকতে হবে। এখন এমন অবস্থা হয়েছে যে বেঁচে থাকতে হলে মার্কেট খোলা জরুরি।’
করোনা পরিস্থিতিতে এভাবেই কষ্টের কথা বলছিলেন রাজধানীর নিউমার্কেটের আজিম ফ্যাশনের কর্মী মোহাম্মদ নিয়াজ হোসেন।
তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, আমি এই পেশায় প্রায় ৭ বছর। দুই ঈদেই নিউমার্কেটে বেচাবিক্রির ধুম পড়ে। এই সময়টায় আমরা অনেক বেশি জামা কাপড় বিক্রি করি। লাভও হয় অনেক। ঈদের সময়ে আমরা বেতনের বাইরে একটু বেশি টাকা ইনকাম করতে পারি। যা দিয়ে পরিবারের সবাইকে নিয়ে ভালো করে ঈদ উদযাপন করি।
‘কিন্তু এবছর সময়টাই আমাদের খারাপ যাচ্ছে। গত এক মাস ধরে মার্কেট বন্ধ রয়েছে। কবে খুলবে তার কোনো নিশ্চয়তা পাচ্ছি না। গচ্ছিত টাকাও শেষ হয়ে আসছে। দোকানের মালিক গত মাসে কিছু টাকা বেতন দিয়েছিল সেটা দিয়েই চলছি। কিন্তু এপ্রিল মাসের বেতন পাবো কিনা সেটাও বুঝতে পারছি না। আর মালিকেরও কিছু করার নেই। তাই ঈদের আগে মার্কেট না খুললে না খেয়ে মরার অবস্থা হয়ে যাবে আমাদের। ’
গাউসিয়া মার্কেটে কাপড় ব্যবসায়ী মোহাম্মদ হালিম খান বলেন, করোনার কারণে পহেলা বৈশাখে আমাদের বিশাল লোকসান হয়ে গেলো। মার্কেট বন্ধ থাকায় কোনো বিক্রিই হয়নি। এখন আবার সামনে ঈদ। পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে ঈদেও মার্কেট বন্ধ থাকতে পারে। আর যদি ঈদেও বন্ধ থাকে তাহলে পরিবারের সবাইকে নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে।
এ বিষয়ে দোকান মালিক সমিতির সভাপতি মো. হেলাল উদ্দিন রাইজিংবিডিকে বলেন, প্রধানমন্ত্রীর এক লাখ কোটি টাকার প্রণোদনা প্যাকেজের সুবিধা দোকানদারদের পাওয়ার সুযোগ নেই। তাই তাদের আয়ের পথ সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। এর ফলে দোকান মালিক ও তাদের কর্মচারীরা অর্ধাহারে ও অনাহারে দিনযাপন করছেন। তাই মে মাসের শুরু থেকেই আমরা প্রতিদিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত স্বাস্থ্যবিধি মেনে দোকান খোলা রাখতে চাই।
তিনি বলেন, পহেলা বৈশাখে মার্কেট ও দোকান বন্ধ থাকায় ৬ থেকে ৭ হাজার কোটি টাকার পুঁজি নষ্ট হয়েছে। একই সঙ্গে রমজান ও ঈদে ২০ থেকে ২২ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ করা হয়। তা বিনষ্ট হওয়ার উপক্রম হয়েছে। তাই আমরা সরকারের কাছে প্রণোদনা প্যাকেজ থেকে আড়াই হাজার কোটি টাকার প্রণোদনা চেয়েছি। এই টাকা পেলে আমাদের ব্যবসায়ীরা কিছুটা হলেও ঘুরে দাঁড়াতে পারবো।
Leave a Reply