মুহাম্মদ কাইসার হামিদ, হাওড় অঞ্চল প্রতিনিধি :
সারা বিশ্বের ন্যায় বাংলাদেশেও প্রাণঘাতী কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের কারনে মানুষ অনেকটা ঘরবন্দি হয়ে পরেছে। এ কারনে মানুষ কর্মহীন হয়ে পরায় আয় রোজগার বন্ধ হয়ে গেছে। অনেকের ঘরে দু’বেলা খাবার জুটছেনা। কর্মহীন মানুষের ঘরে খাবার না থাকায় দিশেহারা হয়ে পড়েছে অনেকেই। এমন সময় সরকারের পাশাপাশি করোনা ভাইরাস পরিস্থিতি আর পবিত্র ঈদুল ফিতরকে সামনে রেখে ভৈরব-কুলিয়ারচরের উন্নয়নের রুপকার কিশোরগঞ্জ – ৬ আসনের সংসদ সদস্য ও বিসিবি সভাপতি জননেতা আলহাজ্ব নাজমুল হাসান পাপন কুলিয়ারচর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ইয়াছির মিয়াকে নির্দেশ দেন সরকারের পাশাপাশি কর্মহীন দরিদ্র, অসহায় ও খেটে খাওয়া মানুষদের পাশে দাঁড়ানোর জন্য।
আলহাজ্ব নাজমুল হাসান পাপনের নির্দেশ পেয়ে করোনা সংকট শুরু থেকে উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও ইলহাম গ্রুপের চেয়ারম্যান দানবীর আলহাজ্ব ইয়াছির মিয়া স্থানীয় সাংবাদিক ও তার নিজস্ব ফেইসবুক আইডি থেকে ” আমি খেলে কুলিয়ারচরবাসী খাবে ” ও ” আমার ঘরে খাবার থাকলে কুলিয়ারচরবাসীর ঘরে খাবার থাকবে ” এই ঘোষণা দিয়ে উপজেলার ৬টি ইউনিয়ন ও পৌরসভায় সম্পূর্ণ ব্যাক্তিগত উদ্যোগে পরিবারের সদস্য ও সেচ্ছাসেবক দলের সদস্যদের মাধ্যমে নগদ অর্থ ও খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করে যাচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় পবিত্র ইদ-উল- ফিতরকে সামনে রেখে গতকাল বৃহস্পতিবার (২১ মে) সকাল থেকে দিনব্যাপী পৌরশহরের ৫, ৭ ও ৯ নং ওয়ার্ডে কর্মহীন দরিদ্র, অসহায় ও খেটে খাওয়া মানুষের ঘরে ঘরে নগদ অর্থ পৌঁছে দেন তার ছোট ভাই মোঃ রায়হান উদ্দিন রেনু ও ভাতিজা শাহাদাৎ হোসেন লিটন ।
একমাস সিয়াম সাধণার পরই পবিত্র ঈদুল ফিতরের দিন । ওই দিন ঈদে সবার মাঝে যেন আনন্দ ফিরে আসে। আর এ দিকে মহামারী করোনা ভাইরাস পরিস্থিতিতে অসহায়, কর্মহীন ও খেটে খাওয়া সাধারণ শ্রমজীবি মানুষের কষ্টের কথা চিন্তা করে পরিবার প্রতি ৫’শত টাকা করে নগদ অর্থ সহায়তা দিয়ে যাচ্ছেন আলহাজ্ব ইয়াছির মিয়া। পৌরশহরের ৫, ৭ ও ৯ নং ওয়ার্ডে থেকে এ কার্যক্রম শুরু হয়েছে । ঈদের আগেই পর্যায়ক্রমে এ উপজেলায় অসহায়, কর্মহীন ও খেটে খাওয়া সাধারণ শ্রমজীবি ৫ হাজার মানুষের ঘরে ঘরে চেয়ারম্যানের দেয়া ঈদ উপহার নগদ অর্থ পৌঁছে দেয়া হবে ।
স্থানীয়রা চেয়ারম্যানের এ মহৎ উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, দেশে করোনা পরিস্থিতিতে গৃহবন্ধি কর্মহীন, দুস্থ ও অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানোটা যুগোপযোগী। জীবন যোদ্ধা হিসেবে দানবীর চেয়ারম্যান আলহাজ্ব ইয়াছির মিয়া যেভাবে উপজেলার বিভিন্ন শ্রেণি পেশার মানুষকে খাদ্য সামগ্রী ও অার্থিক সহযোগিতা করে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন তা অতুলনীয় । তারা আলহাজ্ব নাজমুল হাসান পাপন ও আলহাজ্ব ইয়াছির মিয়া’র সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করে পরম করুনাময় আল্লাহ রাব্বুল আল আমীনের নিকট দু’হাত তুলে দোয়া করেন।
জানা যায়, গত ২৮ মার্চ থেকে এ উপজেলায় ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম শুরু করেন আলহাজ্ব ইয়াছির মিয়া। ইতোমধ্যে ১৫ হাজারেরও বেশী মানুষকে খাদ্য সামগ্রী ও নগদ অর্থ দিয়েছেন তিনি। থেমে নেই খাদ্য সামগ্রী ও নগদ অর্থ বিতরণ কার্যক্রম। চলমান খাদ্য সামগ্রী ও নগদ অর্থ বিতরণে ৩০ হাজার মানুষকে সহায়তা দেয়ার টার্গেট রয়েছে তার।
মানুষের আর্থ সামাজিক অবস্থান চিন্তা করে নগদ পাঁচ শত টাকা করে ৫ হাজার পরিবারের মাঝে বিতরণ সহ তিন ধরণের প্যাকেট করে খাদ্য সামগ্রী বিতরণ করছেন তিনি। অসচ্ছল ও কর্মহীন, নিম্ন, মধ্যবিত্ত এবং প্রবাসী, কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী এই খাদ্য সহায়তা পাওয়ার আওতায় রাখা হয়।
প্রথম প্যাকেটে অসচ্ছল পরিবারের জন্য ৫ কেজি করে চাল, ১ কেজি করে ডাল, ১ কেজি করে পেঁয়াজ, ১ লিটার করে সোয়াবিন তেল, ১ কেজি করে আলু, ১ কেজি করে আটা ও ২টি করে সাবান সহ ৮ ধরনের পন্য রয়েছে। এ সব প্যাকেট করোনায় কর্মহীন ৫ হাজার মানুষের ঘরে ঘরে পৌঁছে দেয় তার সেচ্ছাসেবকরা।
দ্বিতীয় প্যাকেট হটলাইনের মাধ্যমে তালিকা করে ১হাজার প্রবাসী ও দুই শতাধিক কলেজ- বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের পরিবারের মাঝে রাতের আধাঁরে অতি গোপনীয়তা বজায় রেখে খাদ্য সামগ্রী ও নগদ টাকা বিতরণ করা হয়। প্যাকেটে খাদ্য সামগ্রীর মধ্যে ছিলো ২০ কেজি করে চাল, ২ কেজি করে আটা, ১ কেজি করে পেঁয়াজ, ২ কেজি করে আলু, ১ লিটার করে সোয়াবিন তেল, মুড়ি, লবণ ও মিষ্টিকুমড়া সহ ৯ ধরনের পণ্য। শিক্ষার্থীদের জন্য এসবের সাথে আর্থিক অবস্থা বিবেচনা করে অতিরিক্ত ২ – ৩ হাজার করে টাকা দিয়েছেন তিনি।
সর্বশেষ তৃতীয় প্যাকেটে রয়েছে ৫ কেজি করে চাল, ১ কেজি করে আলু, ১ লিটার করে সোয়াবিন তেল, ১ কেজি করে মুড়ি, লবণ ও সাবান সহ ৬ ধরণের পণ্য। এসব প্যাকেট ৭ মে থেকে উপজেলার ৬ টি ইউনিয়ন সহ পৌরসভার ১৫ হাজার মানুষের কাছে পৌঁচানোর কাজ শুরু করেন আলহাজ্ব ইয়াছির মিয়া।
আলহাজ্ব ইয়াছির মিয়া বলেন, আমি কুলিয়ারচরের সন্তান। তাই স্থানীয় সংসদ সদস্য নাজমুল হাসান পাপন ভাই কুলিয়ারচরবাসীর সুখ-দুখে সবসময় তাদের পাশে থাকতে নির্দেশ দিয়েছেন। তাঁর নির্দেশে আমি আমার ব্যাক্তিগত তহবিল থেকে কর্মহীনদের পাশে দাঁড়িয়েছি। যত দিন করোনা ভয়াবহতা বিদ্যমান থাকবে ততোদিন আমাদের এ কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।
Leave a Reply