চাঁদপুরের পাঁচটি উপজেলার ৪০টি গ্রামে রোববার (২৪ মে) পবিত্র ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে দীর্ঘ ৯২ বছর ধরে এসব গ্রামে আগাম রোজা শুরু ও ঈদ উদযাপিত হয়ে আসছে। চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ, ফরিদগঞ্জ, মতলব উত্তর, শাহরাস্তি ও কচুয়া উপজেলার ৪০টি গ্রামের অর্ধ লক্ষাধিক মানুষ সৌদির সঙ্গে মিল রেখে আগাম রোজা ও ঈদ পালন করেন।
হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা হামিদিয়া ফাজিল মাদসায় সকাল পৌঁনে ১০টায় ঈদের প্রথম জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ঈদের নামাজে ইমামতি করবেন সাদ্রা দরবার শরিফের পীর মাওলানা আরিফ চৌধুরী। এরপর ভিন্ন ভিন্ন সময়ে বিভিন্ন মসজিদে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে। ১৯২৯ সালে দেশে আগাম ঈদের প্রচলন করেন সাদ্রা দরবার শরিফের তৎকালীন পীর মরহুম ইসহাক চৌধুরী।
ফরিদগঞ্জের টোরা মুন্সিরহাট জামে মসজিদের প্রধান মাওলানা আকরাম হোসেন জানান, দীর্ঘ ৯২ বছর ধরে এই দরবার শরিফের প্রথম পীর মাওলানা ইসহাক (র.) এই দেশে চন্দ্রমাস হিসেব করে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে পবিত্র রোজা পালন এবং সেই হিসেবে দুটি ঈদ উদযাপন করেন। এরপর তার অনুসারীরা এই ধারাবাহিকতা মেনে চলেছেন।
যেসব গ্রামে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে
হাজীগঞ্জ উপজেলার সাদ্রা, সমেশপুর, অলিপুর, বেলচো, জাঁকনি, প্রতাপপুর, বলাখাল, মনিহার, গোবিন্দপুর ও দক্ষিণ বলাখাল। ফরিদগঞ্জ উপজেলার লক্ষ্মীপুর, কামতা, সেনাগাঁও, বাসারা উভারামপুর, উটতলী,মুন্সিরহাট, মূলপাড়া, গল্লাক, আইটপাড়া, বদরপুর, ভুলাচোঁ, সোনাচোঁ, পাইকপাড়া, সুরঙ্গচাইল, বালিথুবা, কাইতাড়া, নুরপুর, শাচনমেঘ, শোল্লা, হাঁসা ও চরদুখিয়া। মতলব দক্ষিণ উপজেলার দশআনী, মোহনপুর, পাঁচআনী। কচুয়া উপজেলার উজানি এবং শাহরাস্তি উপজেলার বেশ কয়েকটি গ্রামে উৎসবমুখর পরিবেশ ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে।
শরীয়তপুরের ছয় উপজেলার ২৯টি গ্রামে রোববার (২৪ মে) ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। হজরত সুরেশ্বরী (র.) অনুসারীরা সৌদি আরবের সঙ্গে মিল রেখে ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন।
জেলার বেশ কয়েকটি স্থানে মসজিদে ছোট আকারে ঈদের জাময়াত অনুষ্ঠিত হয়েছে। প্রতিবছর ঈদের প্রধান বড় জামাত হয় নড়িয়া উপজেলায় অবস্থিত সুরেশ্বর দরবার শরীফ মাঠ প্রাঙ্গণে। কিন্তু করোনাভাইরাসের কারণে এ বছর সুরেশ্বর দরবার শরিফের পবিত্র দায়রা শরিফ জামে মসজিদে সকাল ৯ টায় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হয়।
সৌদি আরবসহ মধ্য প্রাচ্যে শনিবার (২৩ মে) চাঁদ দেখা যাওয়ায় রোববার ওইসব দেশে ঈদুল ফিতর উদযাপিত হচ্ছে। তাই সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে সুরেশ্বর দারবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা হজরত জান শরিফ শাহ্ সুরেশ্বরী (র.) এর অনুসারীরা ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন।
সুরেশ্বর দরবার শরিফের পীর সৈয়দ তৌহিদুল হোসাইন শাহীন নূরী বলেন, সুরেশ্বর দরবার শরিফের পবিত্র দায়রা শরিফ জামে মসজিদে রোববার সকাল ৯টায় ঈদুল ফিতরের জামাত অনুষ্ঠিত হয়। শরীয়তপুরের ছয়টি উপজেলার ২৯টি গ্রামের অর্ধলক্ষাধিক ধর্মপ্রাণ মুসলমান উৎসাহ উদ্দীপনা ও ধর্মীয় ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে ঘরোয়াভাবে ঈদুল ফিতর উদযাপন করছেন।
হজরত সুরেশ্বরী (র.) এর অনুসারীরা জানান, সুরেশ্বর দরবার শরিফের প্রতিষ্ঠাতা হযরত জান শরিফ শাহ্ সুরেশ্বরী (রা.) এর অনুসারীরা প্রায় দেড়শ বছর আগে থেকে সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে মিল রেখে রোজা রাখেন এবং ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহা পালন করেন।
Leave a Reply