আর সারাদেশের মত পাহাড়ি জেলা রাঙামাটিতেও করোনার ভয়াবহতা ছুঁয়ে গেছে। যান চলাচল বন্ধ রয়েছে, বন্ধ রয়েছে দোকান-পাট। তবে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে কিছু শপিংমল সীমিত আকারে খুললেও বিকেলের মধ্যে তা বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া রয়েছে। যান চলাচল বন্ধ থাকায় এবং করোনার আতঙ্কের কারণে এইসব শপিংমলে নেই কোনো ক্রেতা। ব্যবসায়ীরা বেকার সময় পার করছেন।
এদিকে এক দিন পরেই ঈদুল ফিতর। প্রতিবছর এ সময়ে পাহাড়ি এলাকা নতুন রূপে সাজে। পাহাড়ের পর্যটন স্পটগুলোকে সাজিয়ে তোলা হয় নবরূপে। কিন্তু এইবার বৈশ্বিক করোনা সব পরিকল্পনা ভেস্তে দিয়েছে, কেড়ে নিয়েছে আনন্দ উল্লাস। এ বছর রাঙামাটিতে কোনো পর্যটকের আগমন ঘটবে না। পর্যটকদের পদচারণায় মুখোরিত হবে না পাহাড়ি শহর।
এ অবস্থায় পর্যটন সংশ্লিষ্টরা বেকার সময় পার করছেন, গুণছেন লাখ টাকার লোকসান। একদিকে তাদের ব্যাংক ঋণের বোঝা অন্যদিকে ব্যবসা বন্ধ সব মিলে সমস্যার মধ্যে দিয়ে দিন অতিবাহিত করছেন তারা।
রাঙামাটি হোটেল মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দীন সেলিম বাংলানিউজকে বলেন, প্রতি বছর ঈদুল ফিতরের সময় পর্যটক বরণের জন্য আমরা হোটেল-মোটেলগুলোকে নবরূপে সাজিয়ে তুলি। কিন্তু এ বছর করোনার ভয়াবহতায় আমাদের নেই কোনো কাজ। কারণ পর্যটক আসবে না এ বছর।
হোটেলের শ্রমিকরা বেকার সময় পার করছেন। কিছু কিছু শ্রমিক চলে গেলেও বেশকিছু শ্রমিক আমরা ধরে রেখেছিলাম ঈদের জন্য। মনে করেছিলাম ঈদের আগে করোনা বিদায় নেবে। কিন্তু না করোনা আরও ভয়ঙ্কর রূপ ধারণ করেছে। যে কারণে ধরে রাখা শ্রমিকদের অর্ধেক বেতন দিয়ে আমাদের দেখতে হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, আমরা হোটেল মালিকরা পর্যটক দিয়ে প্রতি বছরে কয়েক কোটি টাকার ব্যবসা করি। কিন্তু এ বছর শূন্য হাতে আমাদের থাকতে হবে। গুণতে হচ্ছে কোটি টাকার লোকসান।
রাঙামাটি পর্যটন করপোরেশনের ম্যানেজার সৃজন বিকাশ বড়ুয়া
বাংলানিউজকে বলেন, পাহাড়ি জেলা রাঙামাটিতে সারা বছর পর্যটক থাকে। কিন্তু পহেলা বৈশাখ, ঈদুল ফিতর, ঈদুল আজহাসহ নানা দিবসে পর্যটকদের উপচেপড়া ভিড় লেগে থাকে। কিন্তু করোনার কারণে আমরা প্রায় ৪ মাসের মতো ব্যবসা করতে পারিনি।
ম্যানেজার সৃজন বলেন, জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ, এপ্রিল এবং মে মাসে মাস প্রতি আমরা ৩৫ লাখ টাকা আয় করি, জুন, জুলাই এবং আগস্ট মাসে কিছুটা বেড়ে মাস প্রতি ৪৫ লাখ টাকা এবং সেপ্টেম্বর, অক্টোবর, নভেম্বর এবং ডিসেম্বর পর্যন্ত মাস প্রতি ৫৫ লাখ টাকার ব্যবসা করি।
এ বছর আর ব্যবসা হবে না। কারণ করোনার ক্রান্তিকালের দিন আরও বেড়ে যাচ্ছে। এ বছর সরকার কয়েক কোটি টাকার রাজস্ব হারাবে।
তিনি আরও জানান, যদি পরিস্থিতির উন্নতি হয় তাহলে পর্যটন করপোরেশন ক্ষতি পুষিয়ে ওঠার চেষ্টা চালাবে। চেষ্টা চলবে সরকারের আয়ের পরিধি বাড়াতে।
Leave a Reply