অনিমেষ দাস(স্টাফ করেসপ্ডেন্ট)
মানিকগঞ্জের হরিরামপুর উপজেলার পদ্মা নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধে ভয়াবহ ভাঙন দেখা দিয়েছে।ইতিমধ্যে উপজেলার রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বকচর, জগন্নাথপুর,রামকৃষ্ণপুর,ভাওয়ারডাঙ্গী এবং বয়ড়া ইউনিয়নের আন্ধারমানিক,খালপাড়,বয়ড়া,দাশকান্দি, দড়িকান্দী এলাকায় বাঁধের আংশিকের বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।এতেকরে পদ্মার ভাঙনকবলিত এলাকার বাসিন্দাদের মাঝে আতঙ্ক বিরাজ করছে।বাঁধটি ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য দাবি জানিয়েছেন পদ্মাপাড়ের মানুষেরা।
হরিরামপুর উপজেলায় ১৩টি ইউনিয়ন।এরই মধ্যে পদ্মার ভয়াবহতায় সম্পূর্ণরূপে হারিয় গেছে উপজেলার লেছড়াগঞ্জ,সুতালড়ি,আজিমনগর, হারুকান্দি আর কাঞ্চনপুর ইউনিয়ন।ভেঙে গেছে বয়ড়া,রামকৃষ্ণপুর, গোফিনাথপুর ও ধুলশুড়া ইউনিয়নের অধিকাংশ ঘরবাড়ি ও বিভিন্ন ফসলি জমি।বর্ষার শুরু ও ভাটার সময় প্রতিবছরই পদ্মা তার ভয়ংকর রুপ দেখাতে কার্পণ্য বোধ করে না।গত বছর পদ্মাগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে উপজেলার ৪৫ নম্বর সৈয়দনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়,কমলাপুর জামে মসজিদ, বাহাদুরপুর বাজার ও কয়েকটি গ্রামীণ সড়কসহ রামকৃষ্ণপুর,কাঞ্চনপুর,ধুলশুরা ও গোফিনাথপুর ইউনিয়নের সহাস্রাধিক বাড়িঘর ও বিস্তীর্ণ কৃষি জমি।
“পদ্মার ভাঙন থামাও হরিরামপুর বাঁচাও”-এই অন্দোলনকর্মী সোহাগ মুন্সী,মাসুদুর রহমান ও স্থানীয় সমাজকর্মী আবিদ হাসান বলেন, উপজেলার জনগণের দাবির মুখে ২০১৬ সালে ১১৭ কোটি টাকা ব্যয়ে মির্জানগর থেকে পয়মালী পর্যন্ত ৮ দশমিক ৮ কিলোমিটার বাঁধ নির্মাণ করা হয়।বাঁধটিতে প্রতিবছরই ভাঙন দেখা দেয়।কয়েকদিন যাবৎ রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের বকচর, জগন্নাথপুর, রামকৃষ্ণপুর, ভাওয়ারডাঙ্গী ও বয়ড়া ইউনিয়নের আন্ধারমানিক, খালপাড় বয়ড়া,দাশকান্দি, দড়িকান্দীসহ সেই বাঁধের বিভিন্ন স্থানে নতুন করে ভাঙন শুরু হয়েছে।তাঁরা আরও জানান,নদীর ভয়াল স্রোতে ও ইঞ্জিনচালিত বড় বড় নৌযান চলাচলের কারণে প্রচণ্ড ঢেউয়ের সৃষ্টি হওয়ার কারণে,বাঁধের সিসি ব্লকগুলো ধ্বসে নদীর অতলে তলিয়ে যাচ্ছে।বাঁধটি সুরক্ষায় এখনই কার্যকর কোনো ব্যবস্থা না নেওয়া হলে হয়তো,সর্বনাশ হয়ে যাবে।পদ্মার অমানবিক গ্রাসে হারিয়ে যেতে পারে উপজেলা পরিষদ,থানা কমপ্লেক্স,উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও সরকারি-বেসরকারি অনেক গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসহ উপজেলার ঘরবাড়িসহ অনেক এলাকা।বাঁধটি ভাঙনরোধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তাঁরা।
হরিরামপুর উপজেলা সহকারী কমিশনার(ভূমি)বিল্লাল হোসেন বলেন,মঙ্গলবার (২৬ মে) পদ্মা নদীর তীর সংরক্ষণ বাঁধের ভাঙন কবলিত এলাকা সরেজমিনে পরিদর্শন করেছি।বাঁধের রামকৃষ্ণপুর ও বয়ড়া ইউনিয়নের বিভিন্ন স্থানে সর্বনাশা ভাঙন দেখা দিয়েছে। বাঁধটি সুরক্ষায় এখনি প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া অতি জরুরি।বিষয়টি পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে কথা বলতে বুধবার (২৭ মে) সকাল ১০টা থেকে দুপুর পর্যন্ত মানিকগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ মাইনুদ্দিনসহ কয়েকজন কর্মকর্তার মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন করা হয়। কিন্তু অনেক চেষ্টার পরও দায়িত্বশীল এসব কর্মকর্তাদের কারো সঙ্গে কথা বলা সম্ভব হয়নি।
Leave a Reply