মোঃ অাব্দুল হান্নান,নাসিরনগর,ব্রাক্ষণবাড়িয়া,জেলার নাসিরনগর উপজেলার ধরমণ্ডল ইউনিয়নের লম্বাহাটি গ্রামের কিশোরী লাইজু আক্তার (১৫) হত্যাকাণ্ডের রহস্য অবশেষে উদঘাটন করতে সক্ষম হয়েছে থানা পুলিশ।
পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী বাবা সনু মিয়া, ভাই আদম আলী ও মামা মাজু মিয়া লাইজুকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করেছে বলে সোমবার (২৯ জুন) রাতে জেলা পুলিশের পাঠানো সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা। তার সঙ্গে ছিলেন নাসিরনগর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কবির হোসেন।লাইজুর হত্যা
ঘটনায় বাবা সনু মিয়া ও মামা মাজু মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তবে হত্যাকাণ্ডে অংশ নেয়া লাইজুর ভাই আদম এখনও পলাতক রয়েছেন বলে জানা গেছে।
পুলিশের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে অারো বলা হয়, লাইজু তার মামা মাজু মিয়ার বাড়িতে থাকতো। ২২ জুন লাইজুকে বাড়ির পাশে পাটক্ষেতে এক যুবকের সঙ্গে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন মামা মাজু মিয়া। বিষয়টি লাইজুর বাবা সনু মিয়া ও মা সাফিয়া আক্তারকে জানান মামা মাজু। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হন বাবা সনু মিয়া। পরদিন (২৩ জুন) সকালে ঘরে বসে লাইজুকে হত্যার পরিকল্পনা করেন সনু ও মাজু।
পরিকল্পনা অনুযায়ী ওই দিন রাত সাড়ে ৯টা থেকে সাড়ে ১০টার মধ্যে লাইজুর বাবা সনু তাকে ঘর থেকে ডেকে বাইরে নিয়ে যান। এরপর লাইজুকে তার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেন বাবা সনু ও মামা মাজু। বাবা ও মামার সঙ্গে হত্যাকাণ্ডে যোগ দেন লাইজুর ভাই আদম আলী। পরবর্তীতে তারা তিনজন মিলে লাইজুর মরদেহ স্থানীয় একটি ডোবায় ফেলে দেন।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোজাম্মেল হোসেন রেজা বলেন, এক ছেলের সঙ্গে লাইজুর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। সেই ছেলের সঙ্গে লাইজুকে আপত্তিকর অবস্থায় দেখে ফেলেন তার মামা মাজু মিয়া। এ ঘটনায় ক্ষিপ্ত হয়ে লাইজুর বাবা ও মামা তাকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। হত্যাকাণ্ডে লাইজুর ভাইও সম্পৃক্ত রয়েছেন। তবে পলাতক থাকায় তাকে গ্রেপ্তার করা যায়নি।
তিনি আরও বলেন, লাইজুর মরদেহ উদ্ধারের পর পুলিশের পক্ষ থেকে মামলা দায়ের করার জন্য বলা হয়েছিল। কিন্তু প্রথমে পরিবারের কেউ মামলা করতে রাজি হয়নি। এছাড়া লাইজুর জন্য পরিবারের কারও কোনো শোকও ছিল না। এসব বিষয়ে আমাদের সন্দেহ তীব্র হয় তাদের প্রতি। মূলত মামাকে টার্গেট করা হয়। এরপর তাকে জিজ্ঞাসাবাদে বাবা ও ভাইয়ের সম্পৃক্ততার কথা বেরিয়ে আসে।
এর আগে শনিবার (২৭ জুন) দুপুরে লম্বাহাটি এলাকার একটি ডোবা থেকে লাইজুর অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে নাসিরনগর থানা পুলিশ। পরদিন লাইজুর মা সাফিয়া আক্তার বাদি হয়ে থানায় মামলা দায়ের করেন।
Leave a Reply