মাসুদ রানা রৌমারী(কুড়িগ্রাম)প্রতিনিধি
৮ বছর অতিবাহিত হলেও মেলেনি সন্তানের খোজ। হারানো সন্তান ফিরে পাওয়ার আশায় মা
শাহেদা বেওয়া এখন দিশেহারা। কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার চররাজিবপুর মন্ডলপাড়া গ্রামের
মোসলেম উদ্দিনের ছেলে শিদুল ইসলাম। দীর্ঘ ৮ বছর পার হলেও খোঁজ মেলেনি তার সন্তানের।
সন্তানকে না পেয়ে এখনও ডুকরে কেঁদে বুক ভাসায়, প্রায় দিনে জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তিনি।
শাহেদা বেওয়ার স্বামী গত ২০০৯ সালে শেষের দিকে মৃত্যুবরণ করেন। স্বামী হারানো বিধবা
শাহেদা ১১ সন্তানের জননী হলেও প্রতিবন্ধী বড় ছেলে আবু সাঈদ (সাঈদ পাগলা) সর্ব কনিষ্ট
শহিদুল এবং শহিদুলের স্ত্রীকে নিয়ে তার নতুন সংসার। বড় ছেলে আবু সাঈদ কর্মক্ষম হওয়ায়
একমাত্র উপার্জনকারী শহিদুলের উপর আসে সংসারের দায়িত্বভার।
রিক্সা চালিয়ে দৈনিক আয়ের টাকা দিয়ে কোন মতে সংসার চালাত ছোট ছেলে শহিদুল। এভাবে
কষ্টে দিন কেটে যায় দুই বছর। ২০১২ সালের প্রথম দিকে পিতার রেখে যাওয়া শেষ সম্বল জমি বিক্রি
করে এবং অন্য ভাইদের সহযোগিতায় বেশি রোজগারের আশায় পারি জমায় দুবাইয়ে।
দুবাই গিয়ে ভাল একটা কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়। কয়েকবার বাড়ীতে টাকাও পাঠিয়েছিল ।
নিয়মিত সে ফোনে সকলের খোজ-খবর নিতো। বছর খানেক যেতে না যেতেই ২০১৩ সালের প্রথম
থেকে পরিবারের লোকজনের সাথে শহিদুলের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়। নানা ভাবে খোজ নিতে
থাকে শহিদুলের স্ত্রী এবং মা শাহেদা বেওয়া। আজ পর্যন্ত তার কোন সন্ধান পাওয়া যায়নি।
অনিশ্চিৎ ভবিষ্যৎ সামনে রেখে দীর্ঘ ৮ টি বছর ধরে সন্তান হারানো বেদনায় এখনো ডুকরে
কেঁদে ওঠে ৬৭ বছর বয়সী এই মা। একদিকে সন্তান হারানোর চাপা কান্না, অপরদিকে
প্রতিবন্ধী বড় সন্তান সাঈদ পাগলা দুথটোই যেন বিষফোঁড়া। আয়-রোজগারহীন কর্মক্ষম
প্রতিবন্ধী ছেলেকে পাড়া-প্রতিবেশীদের দেয়া যাকাত বা ফেতরার টাকায় কোন রকমে নিভু নিভু
অবস্থায় চলছে দিনাতিপাত।
এমন বিষাদময় জীবনে হতভাগার কপালে আজও জোটেনি বিধবা ভাতা বা বয়স্ক ভাতারমত সরকারী
অনুদান। তাই শাহেদা বেওয়া আক্ষেপে সাংবাদিকদের বলেন, “আল্লায় আমাগোরে চোহে দেহে
না কেন? আমাগোরে নিয়া যায় না কেন? আমার পোলারে ফিরায়ে দেয় না কেন?চ্ এমন হাজারো
প্রশ্ন তার। হারানো সন্তানকে ফিরে পেতে শাহেদা বেওয়ার আকুতি।
রাজিবপুর সদর ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল আলম বাদল জানান, এবিষয়ে আমি কিছু জানিনা।
তবে খোজ নিয়ে বিধবা মহিলা বা তার প্রতিবন্ধি ছেলের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করে দিব।
উপজেলা চেয়ারম্যান আকবর হোসেন হিরো বলেন, এব্যাপারে আমি তো কিছু জানিনা।
যতদ্রুত পারি ওই পরিবারের জন্য সার্বিক সহযোগিতা করবো।
এ বিষয়ে রাজিবপুর উপজেলা সমাজসেবা কর্মকতার্ ইসমাইল হোসেনকে অবহিত করলে তিনি
জানান, “যত দ্রুত সম্ভব শাহেদা বেগমের একটি বিধবা কার্ড করে দেয়া হবে।
Leave a Reply