নিজস্ব প্রতিবেদক : করোনা রোগীদের মনগড়া রিপোর্ট দেয়াসহ নানা অভিযোগে গ্রেপ্তারের পর নিজেকেই করোনা রোগী বলে আদালতে দাবি করলেন রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মো. সাহেদ। র্যাবের হাতে গ্রেপ্তার সাহেদ কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে এসময় কান্নাও করেন। বলেন, আমি দেড়মাস ধরে করোনায় আক্রান্ত!
গতকাল ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে তোলা হলে রিমান্ড শুনানির মাঝখানে বিচারককে এসব কথা বলেন দেশজুড়ে আলোচিত এই ‘প্রতারক’। সাহেদকে আদালতে আনার আগে আদালত চত্বরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের ব্যাপক উপস্থিতি ছিলো। শুনানিকালে গণমাধ্যমকর্মীরাও ভিড়ের কারণে ঢুকতে পারেননি।
শুনানিকালে উপস্থিত আইনজীবী ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, সাহেদ নিজেকে করোনা রোগী দাবি করার পাশাপাশি তার হাসপাতালে করোনার চিকিৎসায় তার হাসপাতালের ভূমিকার কথা বলেন। এছাড়াও হাসপাতালের লাইসেন্স না থাকার বিষয়েও কথা বলেন।
আদালত সূত্রে জানা গেছে, সাহেদকে আদালতে তুলে পুলিশ ১০ দিনের রিমান্ড চায়। এ বিষয়ে রাষ্ট্রপক্ষের শুনানি শেষে বিচারক তাকে জিজ্ঞেস করেন তার কিছু বলার আছে কিনা। তখন কাঠগড়ায় দাঁড়িয়ে কান্নাজড়িত কণ্ঠে সাহেদ বলেন, ‘আমি নিজেও করোনা রোগী। আমার বাবা করোনা আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। একমাত্র আমিই বেসরকারি হাসপাতালে করোনা রোগীর চিকিৎসা সেবা দেই। আমি এই ঘটনার সঙ্গে জড়িত নই।’
সাহেদ আরও বলেন, আমি মার্চে প্রথম দিন যখন স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে যাই, তখন তারা আমাকে আমার হাসপাতালের লাইসেন্স নবায়ন করতে বলেন। তখন আমি বলি আমার লাইসেন্সের ঘাটতি আছে। তখন তারা বলে যে লাইসেন্স নবায়নের জন্য সোনালী ব্যাংকে টাকা জমা দেন। আমি তাদের কথা মতো টাকা জমা দেই। সারা দেশে করোনা চিকিৎসার কাজ বেসরকারিভাবে আমরাই শুরু করেছি। তারপরেও আমার সবগুলো প্রতিষ্ঠানকে সিলগালা করা হয়েছে।
এর আগে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় বিশেষ নিরাপত্তার মাধ্যমে ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয় সাহেদকে। এরপর উত্তরা পশ্চিম থানার মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা এসএম গাফ্ফারুল আলম রিজেন্ট হাসপাতালের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ সাহেদ ও এমডি মাসুদ পারভেজকে ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। শুনানি শেষে বিচারক ১০ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। একই মামলার আরেক আসামি তরিকুল ইসলাম ওরফে তারেক শিবলীকে পাঁচ দিনের রিমান্ড শেষে আবার ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন একই তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে বিচারক সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
Leave a Reply