এম,এ,জলিল : ভারতের এক রাজ্যে থেকে বাংলাদেশ হয়ে অন্য রাজ্যের পণ্য আনা নেওয়া শুরু করা হয়েছে। চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলোতে পণ্য পরিবহন যাতায়াত শুরু করা হয়েছে।

বাংলাদেশের সাথে ভারতের ট্রান্সশিপমেন্ট চুক্তির আওতায়, চট্টগ্রাম বন্দর এবং রুটটি নিয়মিত ব্যবহার করার, ট্রায়ালের অংশ হিসেবে এবারের এই ট্রান্সশিপমেন্ট বলে জানিয়েছেন চট্টগ্রামের বন্দর সচিব। এমভি সেঁজুতি প্রথম ট্রায়াল রানে, চারটি কনটেইনার নিয়ে গত শুক্রবার চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছায়।

বৃহস্পতিবার (১৬ জুলাই) দুই দেশের উপকূলীয় চুক্তির অধীনে কলকাতার শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায় বন্দর থেকে চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশে ছেড়ে আসে ভারতের পণ্যবাহী জাহাজ। প্রথমবারের মতো ট্রায়াল জাহাজ চলাচল করায় মাত্র ৪টি কন্টেইনার পাঠিয়েছে ভারত কতৃপক্ষের লোকজন।

যার দুটি কন্টেইনারে রয়েছে রড এবং অন্য দুটিতে রয়েছে খাদ্য সামগ্রী ডাল। এ জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরে পৌঁছানোর পর বাংলাদেশি ট্রাকে করে আগরতলায় পণ্য পৌঁছানো হবে জানান এদেশের কতৃপক্ষ।

আগামী দিনে এ ব্যবস্থার মাধ্যমে ত্রিপুরাসহ উত্তরপূর্ব ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে চাল, গম, ডালসহ বিভিন্ন নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য আরো বেশি পরিমাণে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন বন্দরের চেয়ারম্যান বিনিত কুমার।

তিনি জানিয়েছেন, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে কলকাতা বন্দরের সঙ্গে নিয়মিত ৩টি জাহাজ চলাচল করে, তবে ভারতের উত্তর পূর্বের উদ্দ্যেশ্যে পণ্যবাহী জাহাজ ছেড়ে যাওয়ার ঘটনা এই প্রথম শুরু হলো বৃহস্পতিবার।

এতে ভারতের উত্তরপূবের রাজ্যগুলিতে পণ্য পরিবহন অনেক সহজ হয়ে যাবে। আগে ত্রিপুরা যেতে হলে আসাম পেরিয়ে অনেক বেশী দূরত্ব অতিক্রম করতে হতো। সময়ও লাগত অনেক বেশি। কিন্তু আমরা এবার যখন কলকাতা থেকে কার্গোকে চট্টগ্রাম পোর্ট নিয়ে যাব, সেখান থেকে ত্রিপুরা আগরতলার দূরত্ব মাত্র ২০০ কিমি। তাই এটা একটু নতুন যাত্রা শুরু।

তিনি বলেন, ভারত-বাংলাদেশ সরকারের বন্ধুত্বই এসব থেকে প্রমাণ। বাংলাদেশ সরকার আমাদের এই অনুমতি দিয়েছে। চট্টগ্রামের উপর দিয়ে যাতায়াত করে ওই কার্গো, ত্রিপুরাকে পরিষেবা দেবে। এবার যেমন স্টিলের রড এবং সঙ্গে ডাল যাচ্ছে। তবে আরও অনেক জিনিসও যায়। যেমন ভেজিটেবল অয়েল, চাল ইত্যাদি। তাই এটা অবশ্যই বলতে পারি, এটা একটা কম সময়ে অল্প খরচে বড় একটি পরিষেবা দিতে চলেছে।

এদিনের এ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক ভাবে ভারত থেকে ভার্চ্যুয়াল উদ্বোধন কেন্দ্রীয় জাহাজ চলাচল মন্ত্রকের স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রতিমন্ত্রী শ্রী মনসুখ মান্ডব্য। দেশটির প্রতিমন্ত্রী বলেন, এ পথের সূচনার মধ্যে দিয়ে উভয় দেশের কাছে এক নতুন সুযোগের দরজা খুলে গেল। এটি বাংলাদেশের মাধ্যমে ভারতের উত্তরপূর্ব অঞ্চলে সংযোগ স্থাপনের বিকল্প রাস্তা বলে মনে করেন তিনি। এর ফলে সময়ও কম লাগবে বলে মন্তব্য করেন।

উল্লেখ, বাংলাদেশের মাধ্যমে উত্তর পূর্ব ভারতে পণ্য পরিবহন নিয়ে ২০১৫ সালে নয়াদিল্লি ও ঢাকার মধ্যে চুক্তি সম্পাদিত হয়েছিল। সেই চুক্তি অনুযায়ী ভারত এ প্রকল্পে ৮০ শতাংশ খরচ বহন করবে, বাকি ২০ শতাংশ খরচ দেবে বাংলাদেশ সরকার।