1. admin@lalsabujerdesh.com : ডেস্ক :
  2. lalsabujerdeshbd@gmail.com : Sohel Ahmed : Sohel Ahmed
মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩, ০৯:২৮ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
চট্টগ্রামে তথ্য সংগ্রহকালে সন্ত্রাসী হামলায় আহত সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম নওগাঁয় র‍্যাবের হেফাজতে  সুলতানা জেসমিন নামে এক ভূমি অফিস সহকারীর  মৃত্যু নর্থ- সাইপ্রাস বাংলাদেশ কমিউনিটির “মহান স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন ২০২৩ “ বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণটি ছিল বাঙালির মুক্তি ও স্বাধিকার অর্জনের মূলমন্ত্র: ড.কলিমউল্লাহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজয়নগরে অভিযান শিক্ষা কর্মসূচির উদ্দ্যোগে কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা প্রদান । রংপুরের গঙ্গাচড়ায় চিরকুট লিখে কিশোরীর আত্মহত্যা ভৈরব থেকে ৩৮ কেজি মাদকদ্রব্য গাঁজা পাচারকালে ০১ মাদক কারবারীকে আটক টেকনাফ ২বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার এর বিদায়: নবাগত অধিনায়ক লে.কর্ণেল মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমদ কে বরণ। দেশ ও প্রবাসের সকলকে পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সাংবাদিক মোঃ শহিদুল ইসলাম ফসলি জমি দখল করে মাটি বিক্রি, থানায় অভিযোগ

ভারতীয় পন্য বর্জন করলে বাংলাদেশের কি হবে।

  • আপডেট টাইম : রবিবার, ১৯ জুলাই, ২০২০
  • ৭৭৬ বার

 

আঃ জলিল ঃ

দেশের অধিকাংশ মানুষের ধারণা ভারত সীমান্ত বন্ধ করে দিলে বাংলাদেশ না খেয়ে মরবে। বাস্তবতা হল বাংলাদেশ ভালই বিপদে পড়বে সে ব্যাপারে সন্দেহ নেই। তবে না খেয়ে মরার ধারণা মাথা থেকে ঝেড়ে ফেলুন। বাংলাদেশ এতটা ফেলনা নয়।বাংলাদেশ ভারত থেকে প্রায় $৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করে। কিন্তু মোট বাণিজ্যের হিসাবে ভারত ক্রমশ নিন্মগামী। ২০০৭/০৮ পর্যন্ত ভারত ছিল বাংলাদেশের সব থেকে বড় বাণিজ্য অংশীদার। কিন্তু আজ ভারতকে দ্বিতীয় স্থানে ঠেলে দিয়ে চীন এক নম্বর পজিশন দখল করে নিয়েছে।
যেহেতু ভারত আমাদের বড় কোন রপ্তানি বাজার না, তাই যুক্তরাষ্ট্রের বাজার হারালে বাংলাদেশ যেমন ঝুঁকিতে পড়বে ভারতের বাজার হারালে আমরা টের ও পাব না। বরং বাংলাদেশ ভারত থেকে আমদানি বন্ধ করে দিলে ভারত বিশাল বাজার হারাবে। যেটা ভারতের জন্য বেশ বড় ধাক্কা।

কিন্তু বাংলাদেশের কি উচিত হবে ভারতের থেকে আমদানি বন্ধ করা?। বাস্তবতা হল রাজনীতি কে রাজনীতির স্থানে এবং ব্যবসাকে ব্যবসার স্থানে না রাখলে বাংলাদেশ কখনো এগিয়ে যেতে পারবে না।
তাহলে কেন ভারত থেকেই আমদানি করব?। এজন্য একটি অর্থনীতির থিওরি নিয়ে আলোচনা করা যাক।
ফ্যাক্টর এনডাউমেন্ট থিওরি:
এই থিওরির বিস্তারিত বিশ্লেষণে গেলে অনেকে বুঝতে পারবেন না। তাই আমার নিজের ভাষায় সহজ ভাবে বলার চেষ্টা করছি। ভুল হলে ধরিয়ে দিবেন।
থিওরিটা এমন যে, আল্লাহ সবাইকে সব কিছু দেয় না। যেমন ধরুন প্রতিটি দেশের প্রাকৃতিক সম্পদ এবং রিসোর্স এক রকম নয়। যেমন ধরুন ভারত রাষ্ট্র হিসাবে বিশাল বড়। সে দেশের আবাদি জমিও বেশি। কিন্তু বাংলাদেশ রাষ্ট্র হিসাবে ক্ষুদ্র। আবাদি জমির পরিমাণ ও কম। বাংলাদেশের মাটি উর্বর। কিন্তু জনসংখ্যা বেশি হবার কারণে শুধুমাত্র ধান গাছ এবং অন্যান্য খাদ্য শস্য চাষ করলে কোন রকম নিজ দেশের জনগণের খাদ্য চাহিদা মেটানো সম্ভব। জমি তুলা চাষের জন্য উপযোগী হলেও যদি বাংলাদেশের গার্মেন্টস এর চাহিদা মেটাতে অধিক পরিমাণ তুলা চাষ করা হয় তবে খাদ্য উৎপাদন কমে যাবে। ফলে খাদ্য ঘাটতি দেখা দিবে।
আবার ভারতের জমির অভাব নেই। তুলা চাষ খুব ভাল হয় সেক্ষেত্রে ভারত যদি তুলা চাষ করে তবে তাদের দেশের যে চাহিদা সেটি মিটিয়েও অতিরিক্ত তুলা রপ্তানি করতে সক্ষম। ফ্যাক্টর এনডাউমেন্ট থিওরি যেটা বলে সেটা হল যে দেশে যেই রিসোর্স বেশি সেই দেশের উচিত সেটাকে কাজে লাগানো। সেই রিসোর্স বাদে অন্য রিসোর্স গুলা যেটি ওই দেশে হয়না সেটি যে দেশে বেশি হয় সে দেশ থেকে আমদানি করে মেটানো। এতে সেই দেশের রিসোর্স এর সর্বোত্তম ব্যবহার নিশ্চিত হয়।
বাংলাদেশ-ভারত থেকে গার্মেন্টস এর জন্য আমদানিকৃত তুলার ৪৬% আমদানি করে থাকে। কেন অন্য দেশ থেকে কেনে না? কারণ হল, পার্শ্ববর্তী দেশে তুলার উদ্বৃত্ত রয়েছে। তাই পাশের দেশ থেকে তুলা কিনলে সময় কম লাগবে। দূরত্ব কম হবার কারণে পরিবহন খরচ কম পড়বে। ফলে তুলা থেকে ফেব্রিক উৎপাদন খরচ ও কমে আসবে।
থিওরিটির আরেকটা দিক বলি। বাংলাদেশের ফ্যাক্টর এনডাউমেন্ট রিসোর্স হিসাবে আছে জনসংখ্যা। বাংলাদেশের জনসংখ্যা রাশিয়ার থেকেও বেশি। অধিক জনসংখ্যা বাংলাদেশে কর্মক্ষম মানুষের উদ্বৃত্ত এনে দিয়েছে। এই প্রেক্ষিতে বাংলাদেশ ভাল করবে যদি এমন কোন ইন্ডাস্ট্রি বাংলাদেশে হয় যেটা এ জন্য জনসংখ্যা সব থেকে মুখ্য।
আয়ারল্যান্ড এর মত দেশের জন্য গার্মেন্টস ইন্ডাস্ট্রি করার থেকে আমদানি করে নিলেই তাদের রিসোর্স বেচে যাবে। কারণ অধিক জনসংখ্যা বাংলাদেশে এ শ্রম মূল্য কমিয়ে দিয়েছে। কিন্তু স্বল্প জনসংখ্যা আয়ারল্যান্ড এর মত দেশকে কর্মক্ষম মানুষের ঘাটতি সৃষ্টি করেছে। এমন ক্ষেত্রে আয়ারল্যান্ড যদি চায় যে তারা সব কিছু নিজেরাই উৎপাদন করবে কোন কিছু বিদেশ থেকে আমদানি করবে না।
এজন্য তারা নিজেরা গার্মেন্টস খাতে নিজেদের দেশে বিনিয়োগ করে তবে সেটা লোকসান হবে। কারণ আয়ারল্যান্ডের পক্ষে এত অল্প খরচে পোশাক তৈরি সম্ভব না যেটা বাংলাদেশে সম্ভব। তাই তাদের জন্য কম মূল্যে পোশাক পরিধান করতে গেলে নিজেরা উৎপাদন না করে বাংলাদেশ থেকে কেনা বেশি লাভজনক।
ঠিক এই কারনেই ভারত থেকে আমদানি বন্ধ করা যাবে না। ( যারা ট্যাগ দিবেন, তাদের বলে রাখি পাকিস্তান ভারত বাণিজ্য ও কিন্তু বন্ধ নাই। নিজেরা নিজেদের উপর অবরোধ আরোপ শুধুমাত্র বোকারাই করে)
বাংলাদেশের ব্যবসায়ে প্রতিযোগিতা টিকিয়ে রাখার জন্য ভারত থেকে তুলা আমদানি করা লাগবে। তবে এটাই শেষ কথা নয়। আমাদের অবকাঠামো এবং গভীর সমুদ্র বন্দর রেডি হয়ে গেলে অন্যান্য দেশ থেকেও তুলা আমদানি সহজ হয়ে যাবে। সেক্ষেত্রে আমাদের দেশেই বন্ডেড ওয়ারহাউজ করা যেতে পারে। ইতোমধ্যে যুক্তরাষ্ট্র আগ্রহ দেখিয়েছে এবং বাংলাদেশের কাছে তুলা বিক্রি করতে চাইছে। সেক্ষেত্রে তারা দামের ব্যাপারটাও মাথায় রেখেছে বলে জানিয়েছে।
উজবেকিস্তান থেকেও বাংলাদেশ তুলা আমদানি করে। ভারতের সাথে বাণিজ্য বন্ধ হয়ে গেলে বাংলাদেশের একটি ক্ষতি হবে সেটা হল উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাবে। এখানে তুলার কথা বার বার বলছি কারণ ভারত থেকে আমদানির সিংহভাগই এই তুলা। এছাড়া অন্যান্য যেসব পণ্য আমাদের দেশে আসে সেগুলার মান অতটা ভাল নয়। খাদ্য দ্রব্যে বাংলাদেশ আপাতত স্বয়ংসম্পূর্ণ।
তাই এই খাতে ভারতের সাথে বাণিজ্য বন্ধ হলে খাতা কলমে কোন প্রভাব পড়বে না। কিন্তু ব্যবসায়ীদের দিয়ে বিশ্বাস নেই। এরা রমজান আসলেও দাম বাড়িয়ে দেয়। পণ্য স্টক করে বাজারে ঘাটতি দেখায়। ভারতের সাথে বাণিজ্য বন্ধ হলে এরা তখন কি করবে সেটা আপনারা হয়ত ভালই বুঝতে পারছেন। তবে এটা হচ্ছে সরকারের বাজারের উপর নিয়ন্ত্রণ না থাকার দরুন। এক্ষেত্রে আমাদের বাজার ব্যবস্থা কে ঢেলে সাজাতে হবে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..