মোঃ অাব্দুল হান্নান,,,
ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নাসিরনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের দাঁতমন্ডল গ্রামে প্রতিপক্ষকে ফাঁসিয়ে তাদের সম্পত্তি অাত্মসাৎ করতে ভবঘুরে বৃদ্ধা রহিমা বেগম (৮৫)কে খুন করেন গেলমান ভূঁইয়া ও তার সহযোগিরা। পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তি মুলক জবানবন্দি দিয়েছেন গেলমান ভূইয়া। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তানাসিরনগর থানার তদন্তকারী কর্মকর্তা নাসিরনগর থানার পুলিশ পরির্দশক (তদন্ত) মো.কবির হোসেন।
৩১ জুলাই ২০২০ রোজ শুক্রবার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জাহিদ হোসাইনের আমলি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন অাসামী গেলমান ভুইয়া। পরে তাকে আদালতের মাধ্যমে জেলা কারগারে প্রেরণ করা হয়। জানা গেছে উক্ত মামলায় পুলিশ এ পর্যন্ত ৫ জনকে জেলহাজতে প্রেরন করেছে।
২৬ জুলাই ২০২০ নাসিরনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের দাঁতমন্ডল গ্রামের আক্তার ভূইয়ার বসতবাড়ি সংলগ্ন ডোবায় একটি লাশ ভাসতে দেখে পুলিশে খবর দেয় এলাকাবাসী। খবর পেয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মোজাম্মেল হোসেন ও সরাইল সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনিছুর রহমান ঘটনাস্থল পরিদর্শন ও লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরন করেন।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য বাবলু ভূইয়া, আছির আলম, জানে আলম ও আছকিরকে থানায় আনা হয়। এ ঘটনায় নিহতের ছেলে জরিফ হোসেন বাদী হয়ে অজ্ঞাত নামা কয়েকজনকে আসামি করে নাসিরনগর থানায় মামলা দায়ের করেন।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা মো. কবির হোসেন বলেন, গেলমান ভূইয়া আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন। জিজ্ঞাসাবাদে গেলমান জানান, একই গ্রামের সালাউদ্দিনের সঙ্গে তার চাচা মাহবুব গংদের প্রায় ১৫ বছর ধরে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে আদালতে মামলা মোকদ্দমা চলমান রয়েছে। ঘটনার দিন রাত সাড়ে ৯ ঘটিকার সময় রহিমাকে মাজারে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ঘর থেকে বের করে আবু সাইদ অাল কাদরীর বাংলো বাড়ির পাশে নিয়ে মাটিতে ফেলে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে।পরে একই গ্রামের সন্তোষ দেবনাথের কাছ থেকে একটি ছোট নৌকায় করে লাশ সালাউদ্দিনের বাড়ির পাশে আক্তার মিয়ার ডোবায় ফেলে দেয়। পরদিন সকালে ঘোড়া মাহবুব ও বাবলু প্রচার করতে থাকে সালাউদ্দিনের লোকজন রহিমাকে হত্যা করেছে। এর পর সালাউদ্দিনের পক্ষের লোকজনদের বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর চালায় মাহবুব ও বাবলুর লোকজন।এ সময় তারা সালাউদ্দিনের পক্ষের লোকজনের দুটি দোকান সহ ৩ টি ঘর ভাংচুর করে।মহিলারা বাধা দিতে গেলে তাদের লোকজন দুইজন মহিলাকে কুপিয়ে অাহত করে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।
সরাইল সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আনিছুর রহমান বলেন, লাশ উদ্ধারের খবর পেয়েই আমরা ঘটনাস্থলে পরিদর্শন করি। তারপর স্থানীয়দের সাথে কথা বলে নিহত রহিমার কয়েকজন নিকটাত্মীয়কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসি। তাদের দেয়া ভাষ্যমতে হত্যার মূল আসামি গেলমান ভূঁইয়াকে হবিগঞ্জ জেলার লাখাই থানার মুড়াকড়ি ইউনিয়ন থেকে আটক করি। আসামী গেলমান ভূঁইয়ার দেখানো মতে দাঁতমন্ডল চকবাজার সংলগ্ন খাল হতে লাশ বহনকারী নৌকা পুলিশ উদ্ধার করে। আদালতে হত্যার দায় স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন গেলমান ভূঁইয়া।
Leave a Reply