1. admin@lalsabujerdesh.com : ডেস্ক :
  2. lalsabujerdeshbd@gmail.com : Sohel Ahmed : Sohel Ahmed
মঙ্গলবার, ২৮ মার্চ ২০২৩, ০৮:১৫ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
চট্টগ্রামে তথ্য সংগ্রহকালে সন্ত্রাসী হামলায় আহত সাংবাদিক শফিকুল ইসলাম নওগাঁয় র‍্যাবের হেফাজতে  সুলতানা জেসমিন নামে এক ভূমি অফিস সহকারীর  মৃত্যু নর্থ- সাইপ্রাস বাংলাদেশ কমিউনিটির “মহান স্বাধীনতা দিবস উদ্যাপন ২০২৩ “ বঙ্গবন্ধুর ৭ই মার্চের ভাষণটি ছিল বাঙালির মুক্তি ও স্বাধিকার অর্জনের মূলমন্ত্র: ড.কলিমউল্লাহ ব্রাহ্মণবাড়িয়া বিজয়নগরে অভিযান শিক্ষা কর্মসূচির উদ্দ্যোগে কৃতি শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা প্রদান । রংপুরের গঙ্গাচড়ায় চিরকুট লিখে কিশোরীর আত্মহত্যা ভৈরব থেকে ৩৮ কেজি মাদকদ্রব্য গাঁজা পাচারকালে ০১ মাদক কারবারীকে আটক টেকনাফ ২বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল শেখ খালিদ মোহাম্মদ ইফতেখার এর বিদায়: নবাগত অধিনায়ক লে.কর্ণেল মোহাম্মদ মহিউদ্দিন আহমদ কে বরণ। দেশ ও প্রবাসের সকলকে পবিত্র মাহে রমজানের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন সাংবাদিক মোঃ শহিদুল ইসলাম ফসলি জমি দখল করে মাটি বিক্রি, থানায় অভিযোগ

চামড়া নিয়ে বিপাকে : ক্ষতির মুখে পড়েছে শার্শার এতিম ও হেফজোখানা

  • আপডেট টাইম : মঙ্গলবার, ৪ আগস্ট, ২০২০
  • ৮২ বার

আঃজলিল (শার্শা-যশোর) সংবাদদাতাঃ যশোরের শার্শা উপজেলায় কুরবানির পশুর চামড়ার দাম না পাওয়ায় গরীব দুঃস্থ এতিম ও হেফজোখানায় তার প্রভাব পড়েছে।

ভুক্তভোগীরা বলছেন, গরীব ও দুঃস্থমানুষের পাশাপাশি এতিমখানা, হেফজোখানা ও কওমি মাদ্রাসাগুলোর অর্থনৈতিক চাকা সচল রাখে কুরবানির চামড়া বিক্রির টাকা। এ অর্থ গরিব ছাত্রদের পড়ালেখা, থাকা-খাওয়ার পেছনে খরচ করা হয়। এ সহযোগিতা বরাবর পেলেও এবার কাঁচা চামড়ার দাম কম হওয়ায় বিশাল ক্ষতির মুখে পড়েছে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এই প্রতিষ্ঠানগুলো।

বারোপোতা গ্রামের আল্লাদি বিবি (৮৫)বলেন, প্রত্যেকবার ঈদির পর চামড়ার কিছু টাকা পাই। এবার পালাম না।চামড়া নাকি কেউ নেচ্ছে না। বিক্রি করতি পারিনি।

উপজেলার বড়বাড়িয়া গ্রামের ভিখারি সজ্জোত আলি (৯০)বলেন, আমাগোর কওয়ার জায়গা নেই। চামড়ার কডা টাকা পাতাম তাও পালাম না। কচ্ছে চামড়া বিক্রি নেই।

বালুন্ডা হাইস্কুলের শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, আমি ছাগল (খাসি) কুরবানি করেলাম। চামড়ার কোন ক্রেতা না পাওয়ায় মাটিতে পুতে ফেলেছি।

শার্শার বালুন্ডা বাজারের একজন মাংস বিক্রেতা রেজাউল ইসলাম। প্রতি কুরবানির ঈদে মৌসুমি ক্রেতা হিসেবে গ্রাম থেকে চামড়া কিনে থাকেন। এবারও কিনেছেন তবে সতর্কতার সাথে।

রেজাউল বলেন,এবার চামড়া কিনিছি ১৬০টি, এর মধ্যি ৮৩টি গরুর চামড়া। গরুর চামড়া প্রতিটি ৭০টাকা থেকে ২০০টাকা পর্যন্ত দাম দিছি। ছাগলের চামড়া কিনিছি ১৫/২০ টাকায়। কিছু চামড়া লোক দেছে ‘বিক্রি করতি পারলি তারা টাকা পাবে’ এই শর্তে।

জামতলা জামে মসজিদের ঈমাম হাফেজ মাওলানা হাফিজুর রহমান বলেন, দুই ঈদের মধ্যে ঈদুল আযহার একটা বিশেষত্ব আছে-এই ঈদে গরিব মানুষের কিছু পাওয়ার থাকে। ধর্মীয় মতে মাংসের এক-তৃতীয়াংশ এবং চামড়া বিক্রির টাকা পুরোটাই গরিবের হক।

“এ পুরো জিনিসগুলো ঠিকঠাক মতো গরিব মানুষের হাতে গেলে সেটি তাদের জন্য কিছুটা উপকার নিশ্চিত করত। এর মাধ্যমে সমাজের আয়ের পুনর্বণ্টনে কিছুটা হলেও প্রভাব পড়ে। কিন্তু গত বছর বিশেষ করে কোরবানির চামড়া নিয়ে যা হয়েছে সেটি নজিরবিহীন।এবার তো চামড়া কেউ নিচ্ছে না।”

বাগআচড়া হেফজোখানার তত্ত্বাবধায়ক হাফেজ মাওলানা খায়রুল বাসার বলেন, এখানকার অধিকাংশ ছাত্র গরিব। প্রতিষ্ঠানের লিল্লাহ বোর্ডিংয়ের বিশাল ব্যয় রয়েছে। এই বোর্ডিংয়ের মাধ্যমে দরিদ্র, অসহায়, এতিম শিক্ষার্থীদের বিনামূল্যে খাবার দেওয়া হয়। বছরের ৩ থেকে ৪ মাসের ব্যয়ের অর্থ কুরবানির পশুর চামড়া বিক্রির খাত থেকে আসতো। কিন্তু এবার চামড়ার দাম কম হওয়ায় সেটা সম্ভব হবে না। ফলে শিক্ষার্থীদের লেখাপড়া ও থাকা-খাওয়াতে ব্যাঘাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

সামটা মুসলিম এতিমখানার সভাপতি লিয়াকত আলি বলেন, চামড়ার দাম কম হওয়ায় এতিমখানার বড় ক্ষতি হয়ে গেছে। চামড়া থেকে আসা অর্থ দরিদ্র, অসহায়, এতিম শিক্ষার্থীদের থাকা-খাওয়া ও লেখাপড়ায় ব্যয় করা হতো। এবার হয়তো সেটা আর হবে না ।

ওই এতিমখানার তত্ত্বাবধায়ক আবুল বাসার বলেন, এবার ঈদে ২৭৭টি চামড়া পাইছি কিন্তু চামড়া কেনার জন্য কোনও লোক না পেয়ে এতিমখানার খরচে একজন আড়তদারকে দিয়ে আইছি। তারাও কোন দাম বলেনি। পরে বাজার দর অনুযায়ী টাকা দেওয়া হবে এমন আশ্বাস দিয়েছেন।

টেংরা গ্রামের আজিবর রহমান ৮২ হাজার টাকায় কেনা গরুর চামড়া বিক্রি করেছেন ৩০০টাকায়। নাভারন বাগআচড়া বেনাপোল সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারন সম্পাদক নাসির উদ্দিন বলেন, কুরবানির ষাড়ের মাংশ হয়েছে ৬মন অথচ তার চামড়া বিক্রি করলাম ৪০০টাকায়।

বেনাপোল চেকপোস্টের বাগে জান্নাত কওমি মাদ্রাসার তত্ত্বাবধায়ক আব্দুল হামিদ বলেন, চামড়া বিক্রির টাকা দিয়ে মাদ্রাসার ছাত্রদের খরচের একটি অংশের ব্যয় নির্বাহ করা হতো। এটা হয়তো খুব বেশি বড় নয়। কিন্তু তারপরও চামড়া বিক্রির খাত থেকে এই টাকা আসতো। এবার কুরবানি কম হওয়ায় চামড়া সংগ্রহও কমেছে।তারপরও সেটার দাম নেই।

নাভারনের সিরামকাটি ওয়ালুম কওমি হাফিজিয়া মাদ্রাসা প্রধান হাফেজ আব্দুল্লাহ আল নোমান বলেন, নাভারন কাজিরবেড় ও সিরামকাটি গ্রামের অধিকাংশ মানুষ তাদের কুরবানির পশুর চামড়া আমাদেরকে দিয়ে থাকেন। এবার গরুর চামড়া পেয়েছি ১১২টি আর খাসির ২০৫টি। বেচাবিক্রির চেষ্টা করছি কিন্তু এখনো বেঁচতি পারিনি।

উপজেলার নাভারন বাজারে চামড়া বেচাকেনা করেন মির্জাপুর গ্রামের শফিউর রহমান ও দক্ষিণ বুরুজবাগান গ্রামের চঞ্চল হোসেন। তারা বলেন, ঢাকার ট্যানারি মালিকরা চামড়া নাকি নিচ্ছে না তাই আমরাও কিনতে সাহস পাচ্ছিনে।বড় গরুর চামড়া এক থেকে দেড়শ টাকা সর্বোচ্চ ২০০ টাকায় কিনছি। ছাগলের চামড়া ১৫ থেকে ২০ টাকায় কিনছি। অনেকে ছাগলের চামড়া ফেলে রেখে চলে যাচ্ছে।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..