এম আর ওয়াসিম, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে অপহরণ মামলার আসামী সাগরকে (২২) গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে কোর্টে প্রেরণ করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ ছিল যে সে নওশিন (১৬) নামে এক স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে অপহরণ করেছে। সাগর আগানগর ইউনিয়নের রাধানগর গ্রামের দক্ষিণপাড়ার বাবুর্চি বাড়ির সুরুজ মিয়ার ছেলে ও নওশিন একই ইউনিয়নের নবীপুর গ্রামের মেরাজি বাড়ির আবু সিদ্দিক মিয়ার মেয়ে। এদিকে অপহৃত মেয়ে বাবার বাড়ি ছেড়ে ছেলের বাড়িতে অবস্থান করে ছেলেকে স্বামী দাবী করছে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায় সাগরের স্বজনদের সাথে কিশোরীর বাবার বাড়ির সীমানা নিয়ে দ্ব›েদ্বর কারনে নওশিন কে ২৭ জুলাই প্রাইভেট পড়তে যাওয়ার সময় অপহরণ করে সাগর। পরে ঘটনার ৫ দিন পর ২ আগস্ট মেয়ের বাবা ছিদ্দিক মিয়া বাদী হয়ে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে সাগর কে প্রধান আসামী করে ৫ জনের বিরুদ্ধে একটি অপহরণ মামলা দায়ের করে। অপহরণের পরে তারা মেয়েটিকে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট এলাকায় নিয়ে একটি ঘরে আটকে রাখে। পরে সাগরের মোবাইল ফোনের কল লিস্টের সূত্র ধরে অপহৃত নওশিনকে গত ২১শে জুলাই মঙ্গলবার রাতে সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার বাদাঘাট থেকে উদ্ধার করা হয়। একই সাথে মামলার প্রধান আসামি সাগরকে আটক করা হয়। পরে সাগর কে উক্ত মামলায় কিশোরগঞ্জ জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়।
উল্লেখ্য যে সাগরকে গ্রেফতারেরপূর্বে তার ভাই আফজাল (২৩) ও চাচা সুরুজ আলী (৫৫) কে গ্রেফতার করে জেলে পাঠানো হয়। বর্তমানে জমিনে রয়েছে এবং তারা নিজেদের নির্দোষ দাবী করে। তারা আরো জানায় সাগরের সাথে নওশিন দীর্ঘদিন ধরে প্রেম করে আসছে। কিন্তু মেয়ের পরিবার পক্ষ মেনে নিচ্ছে না বলে তারা পালিয়ে যায়।
এলাকা ও পরিবার সূত্রে জানা যায় যে উক্ত ঘটনায় সাগরের বাবা হঠাৎ একদিন ষ্ট্রোক জনিত কারনে অসুস্থ হয়ে পড়ে। প্রশাসনের অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টির কারনে আপনজন কেউ কাছে গিয়ে সেবা করার সুযোগ হয়নি। গত ঈদ-উল আযহার ৩দিন পর সাগরের বাবা অযতœ আর সেবার অভাবে বিছানায় প্রশ্রাব পায়খানার মাঝেই তার মৃত্যু ঘটে।
এদিকে অপহৃত মেয়ে নওশিন ১১ আগস্ট মঙ্গলবার বাবার পরিবার ছেড়ে চলে আসে সাগরের বাড়িতে। এখানে এসে নওশিন সাগর কে স্বামী হিসেবে দাবী করে। জনগণ ও সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে নওশিন হুমকির স্বরে বলে উঠেন, এখান থেকে আমাকে কেউ ফেরত নিতে চাইলে বা কেউ আমাকে বের করে দিলে আমি আত্মহত্যা করব। সাগর আমার স্বামী। আমার স্বামীকে আমার মা-বাবা জেলে পাঠিয়েছে। এখন তারাই আমার সাগর কে এনে দিতে হবে। নতুবা আমি আত্মহত্যা করব।
অপর দিকে সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য দানিস মিয়া জানান নওশিন সাগরের বাড়িতে চলে আসার পর তার পরিবারের লোকজন তাকে নিতে আসলে সে জনসম্মুখে তাদের সাথে যাবে না বলে আত্মহত্যার হুমকি দেয়। এতে পরিবারের লোকজন বিমুখ হয়ে বাড়িতে ফিরে যায়। একই বক্তব্য পেশ করেন সাবেক সংরক্ষিত মহিলা ইউপি সদস্য জোসনা বেগম।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জনাব মোঃ শাহীন জানান মেয়েটি ছেলের বাড়িতে অবকস্থান করছে এমন ধরনের কোন খরব আমি পায়নি। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তার সাথে কথা বলে বিষয়টি জেনে আমি জানাব।
Leave a Reply