1. admin@lalsabujerdesh.com : ডেস্ক :
  2. lalsabujerdeshbd@gmail.com : Sohel Ahmed : Sohel Ahmed
মঙ্গলবার, ২১ মার্চ ২০২৩, ০৫:৩৯ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
আজ প্রয়াত রাষ্ট্রপতি আলহাজ্ব মোঃ জিল্লুর রহমানের ১০ম মৃত্যুবার্ষিকী ভৈরব প্রেসক্লাবের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকসহ ৫ জন নামধারী সাংবাদিক ও ২৪ জন অসাংবাদিক সদস্যের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা। নিহত সেনা সদস্য নাজিম উদ্দিনের দাফন সম্পন্ন রংপুরের গঙ্গাচড়ায় চার বছরের কণ্যা শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগে (৫৫) বছরের বৃদ্ধা আটক সরকারি কালীগঞ্জ শ্রমিক কলেজের নবীন বরণ অনুষ্ঠিত মৃত্যুর মুখে দাঁড়িয়েও বীর শহীদদের রক্তের সঙ্গে বেইমানি করেননি বঙ্গবন্ধু : ড.কলিমউল্লাহ খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি, ১ মার্চ মাস থেকেই কার্যকর আজ বিশ্বনাথে ছাত্রলীগের নতুন নেতৃত্বের কর্মসূচী কবি এস.পি.সেবু ভৈরবের একজন প্রথিতযশা সাংবাদিক আব্দুল হালিম ইস্পাহানীয়ানস্’৮৫ মিলন মেলা পালিত।

ভৈরবে বঙ্গবন্ধুর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী পালন করা ছিল যাদের অপরাধ

  • আপডেট টাইম : শুক্রবার, ১৪ আগস্ট, ২০২০
  • ১৩৬ বার

 

এম আর ওয়াসিম, ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
ভৈরবের হাজি আসমত কলেজের ছাত্রাবাস দুতলায় একদল পুলিশ উঠে, বলে উঠল তোরা কিসের মিলাদের আয়োজন করেছিস। এত দুঃসাহস তোদের? অকথ্য ভাষায় গালি দিয়েই সেদিন পুলিশ সদস্যরা সবাইকে লাঠিপেটা শুরু করল। পায়ের বুট আর রাইফেলের বাট দিয়ে আঘাত করতে লাগল যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদেরকে। পুলিশের অমানষিক নির্যাতনে সেদিন অনেকেই রক্তাক্ত হয়েছিল । এরপর উপস্হিত ২২ জন নেতাকর্মীকে পুলিশ গ্রেফতার করে থানায় নিয়ে গেল। তারপর তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ বাদী হয়ে বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা দেয়া হলো থানায়। সেদিন তাদের অপরাধ ছিল জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী দিবসে তারা মিলাদ ও দোয়ার আয়োজন করেছে।

ঘটনাটি ঘটেছিল বঙ্গবন্ধুকে ঘাতকরা সপরিবারে হত্যার এক বছর পর ১৯৭৬ সালের ১৫ আগস্ট। এদিন ছিল বঙ্গবন্ধুর প্রথম মৃত্যুবার্ষিকী। স্হানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের আয়োজনে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়েছিল। সেদিন গ্রেফতারকৃত ২২ জনকে পুলিশ কারাগারে পাঠায়। তারপর দীর্ঘদিন কারাভোগ করার পর তারা পর্যায়ক্রমে জেল থেকে ছাড়া পায়। সেদিনের সাহসীদের খবর এখন কেউ রাখেনা । এসব ক্ষোভের কথাগুলি বললেন সেসময়ের গ্রেফতারকৃত ছাত্রনেতা রসরাজ সাহা ও মতিউর রহমান।

সেদিনের ঘটনায় যারা গ্রেফতার হয়েছিল তারা হলো, তৎকালীন থানা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম আক্কাছ( বর্তমানে পৌর মেয়র), ছাত্রলীগ নেতা আসাদুজ্জামান ফারুক ( বর্তমানে সাংবাদিক), রুহুল আমীন, মাহবুব, মতিউর রহমান, মফিজুর রহমান, মোশারফ হোসেন ( জজ মিয়া) , জিল্লুর রহমান জিল্লু, আসাদ মিয়া, আতাউর রহমান, আসাদুল হক শিশু, ফিরুজ মিয়া, দীলিপ চন্দ্র সাহা ও তার ভাই দীজেন্দ্র চন্দ্র সাহা, ফজলুর রহমান, আবদুল হামিদ, ইদ্রিছ মিয়া, মাহবুব আলম, রসরাজ সাহা, সুবল চন্দ্র কর, শাহজালাল হোসেন ও আজমল ভূইঁয়া।

এবারের ১৫ আগস্ট হবে বঙ্গবন্ধুর ৪৫ তম মৃত্যুদিবস। ১৯৭৫ সালের এই দিনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে ঘাতকরা নির্মমভাবে হত্যা করে। এই হত্যাকান্ডের পর দেশে সামরিক শাসন জারি করা হয়। তখন সামরিক আইন প্রশাসক ছিলেন জিয়াউর রহমান। তখন সামরিক সরকারের ভয়ে কেউ বঙ্গবন্ধুর নামটি উচ্চারণ করতনা । দেশের অধিকাংশ আ,লীগ নেতাকর্মীরা ছিল জেলে এবং কেউ কেউ ছিল পলাতক। এই দুঃসময়ে ভৈরবে ২২ জন নেতাকর্মী তৎকালীন হাজি আসমত কলেজের শহীদ আশুরন্জন ছাত্রাবাসে ( বর্তমান শৈবাল হোটেল) বঙ্গবন্ধুর প্রথম শাহাদাৎ বার্ষিকীর আয়োজন করেছিল। এই উপলক্ষে মিলাদ মাহফিল, দোয়া ও কোরআন খতমের আয়োজন করা হয়। বিকেল সাড়ে ৩ টায় ১২ জন মৌলভি ছাত্রাবাসে এসে কোরআন খতম শুরু করে। বিকেল ৪ টার মধ্য ২২ জন নেতাকর্মী মিলাদ মাহফিল অনুষ্ঠানে উপস্হিত হয়। যুবলীগ নেতাদের নিমন্ত্রণে স্হানীয় অনেক যুবলীগ ছাত্রলীগের নেতাকর্মী মিলাদে অংশ নেয়ার কথা ছিল। কিন্ত সেসময় সামরিক সরকারের ভয়ে অনেকেই অনুষ্ঠানে উপস্হিত হয়নি।
সেদিন মিলাদ শুরুর আগেই গোয়ান্দাদের কাছে খবর পৌঁছে যায়। সামরিক সরকারের কর্তৃপক্ষ তখন নির্দেশ দেয়, আয়োজন বন্ধ করে আয়োজনকারীদের গ্রেফতার করতে। এই নির্দেশ দেয়ার পর ভৈরব থানা পুলিশের ২০/৩০ জন পুলিশ সদস্য ঘটনাস্হলে এসে ছাত্রাবাসটি ঘিরে ফেলে। এসময় পুলিশ ছাত্রাবাসে ঢুকেই অকথ্য ভাষায় গালাগালি ও নির্যাতন শুরু করে। এরপর ২২ জনকে গ্রেফতার করে এবং মৌলভীদেরকে আটক করার পর থানায় নিয়ে মুচলেকা রেখে মৌলভীদেরকে ছেড়ে দিলেও ২২ জনকে আটক করা হয়।
সেদিনের গ্রেফতারকৃত যুবলীগ নেতা ফখরুল আলম আক্কাছ বলেন, ৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় যুদ্ধ করতে গিয়ে বেঁচে গেছি। জাতির জনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে ঘাতকরা হত্যা করেছে। সেখানে আমাদের গ্রেফতার একটি তুচ্ছ ঘটনা। বঙ্গবন্ধুর নামে মিলাদ দোয়া পড়ানো ছিল সেদিন আমাদের অপরাধ। একারনে আমি এক বছর কারাগারে বন্দি ছিলাম। তখন ফাঁসির সেলে আমাকে বন্দি করে রেখেছিল।

আরেক গ্রেফতারকৃত নেতা মতিউর রহমান এই প্রতিনিধিকে বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডের পর কয়েক বছর এদেশে কেউ তার নামটি উচ্চারণ করতে ভয় পেত। আমরা সেদিন দুঃসাহসিকতার সাথে মিলাদের আয়োজন করেছিলাম। এখন আমাদের দল ক্ষমতায় কিন্ত দলীয় নেতারাও আমাদের স্মরণ করেনা। প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎ যদি পেতাম তবে ক্ষোভের কথাগুলি বলতে পারতাম।
সেদিন গ্রেফতারকৃত ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান ফারুক বলেন, সেইসময় আমি কলেজে পড়তাম। একজন মুসলমান হিসেবে সেদিন বঙ্গবন্ধুর জন্য মিলাদ দোয়ার আয়োজনে অংশ নিয়ে গ্রেফতার হয়ে ৫ মাস ২৭ দিন কারাগারে ছিলাম। সেদিনের কথাগুলি মনে পড়লে আজও আমার শরীর শিহরিয়ে উঠে। বঙ্গবন্ধুর নামে মিলাদ পড়ানোর কারনে সেদিন সামরিক সরকারের নির্দেশে আমাদের গ্রেফতার করা হয়।

নিউজটি শেয়ার করুন..

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

এ জাতীয় আরো খবর..