মোঃ শহিদ, উখিয়া উপজেলা প্রতিনিধি : “সমুদ্র সৈকত পরিষ্কার রাখি, সবাই মিলে সুস্থ থাকি” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মুজিব বর্ষ, ১৫ই আগষ্ট মহান জাতীয় শোক দিবসকে সামনে রেখে এবং ১২ই আগষ্ট গেল আন্তর্জাতিক যুব দিবস উপলক্ষে সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে (ক্যাপ, চশমা, মাস্ক, হ্যান্ড গ্লাভস্ পরিহিতাবস্থায়) এবং সামাজিক দুরত্ব বজায় রেখে “Youth Organization of Ukhia (YOU) তথা উখিয়ার যুব সেচ্ছাসেবী সংগঠনের পক্ষ থেকে আজ শুক্রবার সারাদিন সমুদ্র সৈকত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযান সফলভাবে সম্পন্ন করা হয়েছে।
এতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন Gardenia Language Care (GLC) এর English Language Instructor ও অত্র সংগঠনের সম্মানিত উপদেষ্টা হুমায়ুন কায়সার মামুন স্যার। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সম্মানিত উপদেষ্টা ও উখিয়া ইন্টারন্যাশনাল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সম্মানিত সহকারী প্রধান শিক্ষক সাইফুল ইসলাম স্যার।
সংগঠনের সভাপতি কফিল উদ্দিনের নির্দেশক্রমে অনুষ্ঠানের শুভ সূচনা হয়। প্রধান অতিথি, বিশেষ অতিথি, সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকসহ সদস্যরা বক্তব্যে বলেন।
দেশে প্রতি বছর হাজার হাজার মেট্টিক টন বর্জ্যের সৃষ্টি হয় এসব বর্জ্য অপসারণ না করার কারনে পরিবেশ, জীব বৈচিত্র্য রক্ষায় হিমশিম খেতে হয় প্রতিনিয়ত এছাড়াও নানান ধরনের বায়ু বাহিত রোগের সন্ধান মিলে ময়লার দুর্গন্ধে। বিশেষ করে সামুদ্রিক প্রাণী, জীব বৈচিত্র্য দিন দিন লোপ পেয়ে যাচ্ছে আমাদের নিক্ষিপ্ত ময়লা তথা প্লাস্টিক বোতল, গাছের গুড়ি, ভাঙ্গাচোরা প্লাস্টিকের টুকরো ও পলিথিন ফেলার কারনে।
এসব নিক্ষিপ্ত ময়লার আঘাতে মরে চরে ভেসে আসে কাঁকড়া, কাছিম, তিমি, শামুকসহ নাম না জানা হাজার হাজার সামুদ্রিক প্রাণী। এসব প্রাণীকে বাঁচানোর জন্য আমাদের সবাইকে একযোগে কাজ করতে হবে। মানবিক কাজের পাশাপাশি এসব কাজও করার জন্য চেষ্টা করতে হবে, যাতে করে আমাদের জীব বৈচিত্র্য আমরা নিজেরাই রক্ষা করতে পারি।
এ কাজে সহযোগিতা করেন বাংলাদেশ ট্যুরিস্ট পুলিশের ইনানী রিজিয়নের এসপি মহোদয়। তিনি বলেন, তরুণরাই পারবে একটি সমাজকে বদলে দিতে, একটি দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে, যদি তারা তারুণ্য শক্তি দিয়ে কাজ করে যায়। এখানে হাজার হাজার পর্যটক আসে, ঘুরে ফিরে চলে যায়, অনেক সময় তারা সচেতন হওয়া সত্বেও সৈকতে ময়লা করে চলে যায়। এতে দুর্ভোগ পোহাতে হয় পরিচ্ছন্নতা কর্মীদের।
বাংলাদেশ সরকার তরুণদের নিয়ে যে কাজ করে যাচ্ছে তা অভাবনীয়। আমরা একজন সচেতন হলে হবেনা, সবাইকে সচেতন হতে হবে নিজ নিজ জায়গা থেকে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অনেকভাবে কাজ করে যাচ্ছে পরবর্তী প্রজন্মকে একটি সোনার বাংলাদেশ উপহার দিতে, শুধু তিনি নিজেই কাজ করলে হবেনা, প্রত্যেক সেচ্চাসেবী সংগঠনকেও তার কাজে শরীক হতে হবে। পরে তিনিও সংগঠনের সদস্যদের সাথে কাজে জড়িয়ে পরেন ও সহযোগিতা করেন যতক্ষণ পর্যন্ত সৈকত পরিষ্কার করা শেষ হয়নি। পরে সংগঠনের সফলতা কামনা করেন। এবং সবসময় এসব কাজে সহযোগীতা করার আশ্বাস দেন।
সংগঠনের সভাপতি বলেন,
দেশের উন্নয়নে তরুণ সমাজ যদি এভাবে এগিয়ে আসে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার স্বপ্নের সোনার বাংলাদেশ বিনির্মানে ভবিষ্যতে কার্যকরী ভূমিকা পালন করবে। উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে সকল সামাজিক কাজে সেচ্ছাসেবকদের সম্পৃক্ত করা হোক, সেই সাথে আজকের মতো সমুদ্র সৈকত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযানের অগ্রযাত্রা ঘটুক বারবার এটাই কামনা করছেন।
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক রাশেদুল ইসলাম বলেন, অত্র মাসের ১৭ তারিখের পরে সীমিত আকারে পর্যটন এলাকা খুলে দেওয়ার পর হাজার হাজার পর্যটক এসে ভীড় জমাবে, যাতে করে ময়লা আবর্জনার জন্য পর্যটকদের দুর্ভোগ পোহাতে না হয় এজন্য আমরা চাই পর্যটন এলাকা খুলে দেওয়ার আগে সৈকত পরিষ্কার করে রাখতে। তাহলে সবার জন্য সুবিধা হবে বলে আশা করছি। তাই আমাদের সেচ্ছাসেবী সংগঠন থেকে এই মহতি উদ্যোগের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আপনার, আমার, আমাদের সবার স্বতঃস্ফূর্ত সহযোগীতায় পারে একটি সমাজকে বদলে দিতে। “আপনি, আমি এগিয়ে এলে এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ”। তাই আসুন আমরা আমাদের, পরিকল্পিত সুন্দর সমুদ্র সৈকত গঠনে ভূমিকা রাখি। জীব বৈচিত্র্য রক্ষা করি। সর্বশেষ এই মহতি উদ্যোগ বাস্তবায়নে প্রশাসনের ভূমিকাও ছিলো অনস্বীকার্য।
পরে সমুদ্র সৈকত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা অভিযানের পাশাপাশি করোনা ভাইরাসের উপর সচেতনতামূলকসেশন প্রদান করা হয়, যাদের মুখে মাস্ক ছিলনা তাদের জন্যে সার্জিক্যাল মাস্ক বিতরণ করা হয়, এলাকার বিভিন্ন মসজিদে মসজিদে হাত ধোয়ার জন্য সাবান বিতরণসহ জনসচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। এতে সবার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ করায় সবাইকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানায় সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কফিল উদ্দিন।
Leave a Reply