লাল সবুজের দেশ প্রতিবেদক ঃ
গত ২৬ এপ্রিল গুলশানের একটি ফ্ল্যাটে মারা যান মুনিয়া। মুনিয়া আত্মহত্যা করেছেন, নাকি তাকে হত্যা করা হয়েছে তা তদন্তের আগেই তার বড়বোন নুসরাত তানিয়া গুলশান থানায় একটি আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলা করেন। এক মাস ধরে এই মামলার তদন্ত চলছে। এই মামলার তদন্তে মুনিয়া এবং নুসরাত সম্পর্কে অনেক চাঞ্চল্যকর তথ্য পাওয়া গেছে। একাধিক সূত্র বলছে, কুমিল্লা থেকে মুনিয়াকে ঢাকায় নিয়ে এসেছিলেন যুবলীগের বহিষ্কৃত নেতা, ক্যাসিনো সম্রাট হিসেবে পরিচিত ইসমাইল চৌধুরী সম্রাট। দীর্ঘদিন মুনিয়া সম্রাটের তত্ত্বাবধানেই ছিলেন।
মামলার তদন্তে মুনিয়ার ফোন, মেসেঞ্জার এবং ডায়েরিতে যেসব তথ্য পাওয়া গেছে তা বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, সম্রাটই ছিল মুনিয়ার ঢাকার অভিভাবক। সম্রাট ক্যাসিনো কাণ্ডে জেলে যাওয়ার পর কিছু দিনের জন্য অর্থ কষ্টে পড়েছিলেন মুনিয়া। মুনিয়ার মেসেঞ্জারে এবং ডায়েরিতে এ সম্পর্কিত তথ্য পাওয়া যায়। এ সময় নুসরাত তার ছোটবোনের জন্য নতুন অভিভাবক খোঁজা শুরু করেন। এ সময়ই চট্টগ্রামে সাবেক হুইপপুত্র শারুনের সঙ্গে পরিচয় হয় নুসরাতের। মুনিয়াকে শারুনের হাতে তুলে দেন নুসরাত। তখন থেকেই শারুনই মুনিয়াকে দেখভাল শুরু করে। কিন্তু মুনিয়া এবং নুসরাত এ সময় এক ব্যক্তির ওপর নির্ভরশীল থাকাটাকে বিপজ্জনক মনে করা শুরু করেন। সম্রাটের জেলে টার্গেট করা শুরু করেন। নুসরাত-মুনিয়া জুটি খুব স্বল্প সময়ের মধ্যেই উঁচু মহলের পরিচিত মুখে পরিণত হন। নুসরাত বিভিন্ন ব্যবসায়ী, শিল্পপতি এবং ধনাঢ্য ব্যক্তিদের সঙ্গে মুনিয়াকে পরিচয় করিয়ে দিতেন। এরপর মুনিয়া তাদের ঘনিষ্ঠ হতেন। এক পর্যায়ে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মুনিয়া তাদের ব্ল্যাকমেইল করতেন। এ সময় নুসরাত তাদের হুমকি দিতেন। এভাবে বহু ব্যবসায়ীকে ব্ল্যাকমেইল করেছেন মুনিয়া।
তার প্রেমের ফাঁদে পা দিয়ে অনেকেই আত্মসম্মান রক্ষায় নীরবে টাকা দিয়েছে। এরকম চলছিল ভালোই। কিন্তু একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে যাওয়ার বিষয়টি পছন্দ করেননি শারুন। মুনিয়ার প্রেমে পড়েছিলেন শারুন। মুনিয়ার বহুগামিতায় ক্ষুব্ধ হয়ে শারুন মুনিয়াকে হত্যা করেছে কি না, সেটিই তদন্তের মূল বিষয় হওয়া উচিত বলে সংশ্লিষ্টরা মনে করেন। এই অভিযোগে ইতোমধ্যে একটি মামলা করেছেন মুনিয়ার বড়ভাই সবুজ।
Leave a Reply